Header Ads Widget

Ticker

6/recent/ticker-posts

বাসি খাবার শিক্ষামূলক গল্প

 বাসি খাবার

একটি ছেলে ছিল। মা তার বিবাহ দিয়েছিল। কিন্তু ছেলেটি কোনো কাজ করত না। মা যখনই তাকে খেতে দিত, তখনই বলত, ‘বাবা ! বাসি ভাত খাও।’ ছেলেটি বুঝতে পারত না যে, মা কেন এমন কথা বলেন। তুবও সে কিছু বলতো না। একদিন মা কোনো কাজে বাইরে গেছে, যাবার সময় বউমাকে (ছেলের বউকে) বলে গেছে যে ছেলে এলে তাকে খেতে দিতে আর খেতে দিয়ে বলতে হবে যে, বাসি ভাত খেয়ে নাও। বউটি তার স্বামীকে খেতে দিয়ে তাই বলল, তাতে ছেলেটি রেগে গেল, আরে মা তো একথা বলেই থাকে, আর এ-ও শিখে গেছে! সে তখন তার স্ত্রীকে বলল, ‘বলতো, ভাত ঠাণ্ডা কোথায় ? ভাত তো গরম আর ডাল তরকারী সবই গরম, তাহলে তুমি বাসি ভাত বলছ কেন?’ তার স্ত্রী বলল, ‘সে কথা তোমার মা জানেন। তোমার মা-ই আমাকে এই কথা বলতে বলেছেন, তাই আমি বলেছি।' ছেলেটি বলল, ‘আমি কিছু খাব না। মা বলেন বলে তুমিও সেই কথা শিখে নিয়েছ!’

মা বাড়ি এসে জিজ্ঞাসা করল, 'আমার ছেলে খেয়েছে ?” বউটি উত্তর দিল, “উনি তো খানইনি, উল্টে রেগে গেছেন।' মা ছেলেকে জিজ্ঞাসা করতে ছেলে বলল, ‘মা তুমি রোজ রোজ বল যে বাসি ভাত খেয়ে নাও, আমি সে কথা মেনে নিই, এখন আমার বউও তাই বলতে শিখে গিয়েছে। খাবার তো গরমই, তুমি বল, ভাত বাসি কী করে হয় ?’ মা জিজ্ঞাসা করল, ‘বাসি ভাত কাকে বলে ?’ ছেলেটি বলল—‘সকালের তৈরি খাবার সন্ধ্যায় ঠাণ্ডা হয়ে যায়। তেমনই আগের দিনের তৈরি করা খাবার পরের দিন বাসি হয়ে যায়। বাসি ভাত ঠাণ্ডা আর এখনই রান্না করা ভাত গরম হয়।' মা বলল- ‘বাবা, এবার তুমি চিন্তা করে দেখ । তোমার বাবার যে রোজগার, তা ঠাণ্ডা এবং বাসিভাতের মতো। গরম আর তাজা খাবার তখনই হবে, যখন তুমি নিজে উপার্জন করে আনবে।’ ছেলে তখন সব বুঝতে পেরে মাকে বলল— ‘ঠিক আছে মা, এবার থেকে আমি নিজে উপার্জন করে গরম (তাজা) খাবার খাব!’

এই গল্পটি থেকে এই শিক্ষা পাওয়া যায় যে, বিবাহের পরে বাসি ভাত খাওয়া উচিত নয়, নিজ উপার্জনের খাবার খাওয়া উচিত। যখন ভগবান রাম বনবাসে গিয়েছিলেন, সেইসময় রাবণ সীতাকে অপহরণ করেছিল। রামায়ণের কোথাও একথা শোনা যায়নি যে, রাম ভরতকে খবর পাঠিয়েছেন রাবণ আমার স্ত্রীকে হরণ করেছে, তুমি আমাকে সাহায্য করো। কারণ রাম জানতেন যে, বিবাহ করলে স্ত্রীকে রক্ষা করা ও পালন করা স্বামীর কর্তব্য। তিনি প্রথমে নিজ বাহুবলে সুগ্রীবকে সাহায্য করেন, পরে তাঁর কাছ থেকে সাহায্য গ্রহণ করেন। রাম সুগ্রীবকে অর্থ, নগরী, রাজত্ব এবং স্ত্রী—এই চারটি বস্তু পাইয়ে দিয়ে তবে নিজের স্ত্রীর জন্য সাহায্য নিয়েছিলেন। তাই বিবাহ করা তখনই উচিত, যখন স্ত্রী ও সন্তানদের পালন-পোষণ করার ক্ষমতা হবে। এই ক্ষমতা না থাকলে বিবাহ করা কখনোই উচিত নয়। সোর্স - স্বামী রামসুখদাসজী মহারাজের প্রবচন থেকে সংগৃহীত।

Post a Comment

1 Comments

  1. খুব সুন্দর শিক্ষামূলক নীতি গল্প। এই ধরনের শিক্ষামূলক গল্প, মোটিভেশনাল উক্তি এবং রহস্য গল্প পড়তে ভিজিট করুন অনুপ্রেরণা ডটকম

    ReplyDelete